সংগঠন পদ্ধতি অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার গুরুত্ব

সংগঠন পদ্ধতি অনুযায়ী জীবন পরিচালনা করার গুরুত্ব


মহান আল্লাহ তাআলা মুসলিমগণকে একতাবদ্ধ হয়ে সংগঠনের অধীনে থাকতে নির্দেশ প্রদান করেছেন। সংঘবদ্ধ হয়ে জীবন যাপন করা অপরিহার্য কর্তব্য। আপনার নিজের পরিবারের দিকেই তাকান না! দেখুন সেখানে আপনিই নেতা আপনার অধীনস্থ রয়েছে আপনার স্ত্রী এবং সন্তান। আর আপনার পরিবারটা হচ্ছে একটি সংগঠন। সেখানে আপনি যেভাবে চালাবেন সেভাবেই তারা চলতে বাধ্য।

কিন্তু আপনার পরিবারে যদি সংঘবদ্ধতা না থাকে তাহলে সেখানে অশান্তি বিরাজ করবে। সবসময় গন্ডগোল লেগেই থাকবে। তাই সেখানে সংগঠন পদ্ধতি প্রয়োজন। তেমনিভাবে সকল মুসলিমকে সংঘবদ্ধভাবে জীবন পরিচালনা করার জন্য মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে অসংখ্য যায়গায় ঘোষণা করেছেন। এবং হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ এটির গুরুত্ব বর্ণনা করেছেন।

সংগঠন সম্পর্কে কোরআনের আয়াতঃ

আল্লাহ সেই সব লোকদের ভালবাসেন যারা তাঁর পথে এমনভাবে কাতারবন্দী হয়ে লড়াই করে যেন তারা সীসা গলিয়ে ঢালাই করা এক মজবুত দেয়াল।
{সূরাঃ আস সফ, আয়াতঃ ৪}

তোমরা যেন তাদের মতো হয়ে যেয়ো না, যারা বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে গেছে এবং সুস্পষ্ট ও প্রকাশ্য হিদায়াত পাওয়ার পরও মতবিরোধে লিপ্ত হয়েছে। যারা এ নীতি অবলম্বন করেছে তারা সেদিন কঠিন শাস্তি পাবে
{সূরাঃ আলে ইমরান, আয়তঃ ১০৫}

তোমরা সবাই মিলে আল্লাহ‌র রুজ্জু মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরো এবং দলাদলি করো না।
{সূরাঃ আলে ইমরান, আয়তঃ ১০৩}

সংগঠন সম্পর্কে হাদীসঃ

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যখন কোন তিনজন ব্যক্তি সফরে থাকে, তখন যেন একজনকে আমীর বানিয়ে নেয়
{আবু দাউদ শরীফ, হাদীসঃ ২২৪২}

হযরত আবু যর রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, যে সংগঠন থেকে এক বিঘত পরিমাণ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেল, সে তার ঘাড় থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেললো।
{আবু দাউদ শরীফ, হাঃ ৪১৩১}

হযরত হারিসুল আশয়ারী রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেছেন, আমি তোমাদেরকে পাঁচটি বিষয়ে নির্দেশ দিচ্ছি যেগুলোর ব্যাপারে আল্লাহ তাআলা আমাকে নির্দেশ দিয়েছেন।

১। জামায়াত বদ্ধ হবে।
২। নেতার আদেশ মন দিয়ে শুনবে।
৩। তার আদেশ মেনে চলবে।
৪। আল্লাহর পথে হিজরত করবে।
৫। আল্লাহর পথে জিহাদ করবে।

আর তোমাদের মধ্য হতে যে সংগঠন থেকে বিঘত পরিমাণ সরে গেল সে তার ঘাড় থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেললো। তবে যদি ফিরে আসে তা ভিন্ন কথা। আর যে ব্যক্তি জাহিলিয়াতের দিকে আহবান জানায় সে জাহান্নামি। সাহাবীগণ রাঃ বললেন, ইয়া রাসূলুল্লাহ সাঃ সে যদি নামায পড়ে, রোযা রাখে তারপরও? রাসূলুল্লাহ সাঃ বললেন, যদি রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে এরপরও জাহান্নামি হবে।
{মুসনাদে আহমাদ, হাদীসঃ ১৬৫৪২}

হযরত ওমর রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সংগঠন ব্যতীত ইসলাম নেই, আর নেতৃত্ব ব্যতীত সংগঠন নেই এবং আনুগত্য ব্যতীত নেতৃত্ব নেই।
{আসার}

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাঃ কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমীরের আনুগত্যকে অস্বীকার করত সংগঠন পরিত্যাগ করল এবং সে সেই অবস্থায় মারা গেল সে জাহেলিয়াতের মৃত্যুবরণ করল।
{মুসলিম শরীফ}

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url