আলেম এবং আবেদের মধ্যে পার্থক্য
জ্ঞানী এবং অজ্ঞ কখনো সমান নয়ঃ
"বিজ্ঞ যেথা ভয় পায়
অজ্ঞ সেথা আগে ধায়"
একজন জ্ঞানী আলেম মানুষ যা বলবেন সে সম্পর্কে প্রচুর পড়াশোনা করে নিশ্চিত হয়ে তারপর বলবেন। কারণ তিনি যানেন, তার কথায় যারা যারা আমল শুরু করে দিবেন তাদের প্রত্যেকের নিকট থেকে একটি অংশ আল্লাহ তাআলা তাকে দান করবেন। যদি সঠিক কথা বলে থাকেন তবে নেকী লাভ করবেন আর যদি ভুল বলে থাকেন তাহলে গোনাহ লাভ করবেন।
কতটা স্পর্শ কাতর বিষয় চিন্তা করে দেখুন! তাই তো আলেমরা সহজে মুখ খুলেন না বরং অন্য আলেমকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে বলেন। আলেমরা ইমামতি করতেও ভয় পান কারণ কিয়ামতের ময়দানে ইমামকে তার মুসল্লীদেরকে নিয়ে হাশর করাবেন। সেই দিন জামাআতের নামাযের হিসাব গ্রহণ করা হবে তার থেকে। আর মুক্তাদীগণ বেঁচে যাবেন কারণ তারাতো "ইকতাদাইতু বিহাজাল ইমাম" বলে ইমামের কাঁধে চাপিয়ে দিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ কতটা মারাত্মক চিন্তা করে দেখেন। তাই তো আলেমগণ এই দায়িত্ব থেকে বাঁচার জন্য ইমামতি থেকে পালিয়ে বেড়ান।
আর যে অজ্ঞ আলেম নয় কিন্তু আবেদ তথা ধার্মিক তার তো কোন বাচ বিচার নাই। তিনি আগে কথা বলবেন কারপর ভাববেন। ইমামতির জন্য লালায়িত থাকবেন। ইমামতি করাকে অনেক সম্মানের কাজ ভাববেন। হ্যাঁ ইমামতি করা অবশ্যই সম্মানিত কাজ কিন্তু এর ক্ষতি অনেক বেশী। সফলভাবে ইমামতি করলে অনেক ফায়দা আছে। তারপর মানুষের সালাম পাবার জন্য অনেক লালায়িত থাকবেন। মানুষ তাকে দেখে সম্মান করুক, বসা থেকে উঠে দাঁড়াক এগুলো আকাংখা করবে। কারণ, তিনি তো আলেম নয়। তাই এবিষয়ে তার জানা নাই। সে যা ইচ্ছে তাই করতে পারে, ভাবতে পারে, বলতে পারে।
এজন্য মহান আল্লাহ তাআলা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেনঃ
অর্থাৎ, বল, যারা জানে এবং যারা জানে না তারা কি সমান? (যুমার ৯)
অর্থাৎ, যাদেরকে জ্ঞান দান করা হয়েছে আল্লাহ তাদেরকে বহু মর্যাদায় উন্নত করবেন। (মুজাদালা ১১)
অর্থাৎ, আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে জ্ঞানীরাই তাঁকে ভয় করে থাকে। (ফাত্বের ২৮)
হাদীসে রাসূলুল্লাহ সাঃ ইরশাদ করেছেনঃ
মুআবিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, “আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকেই দ্বীনী জ্ঞান দান করেন।”
(বুখারী ৭১, ৩১১৬, ৭৩১২, মুসলিম ২৪৩৬, ২৪৩৯, ইবনে মাজাহ)
উবাদাহ বিন স্বামেত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ
আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন, “সে ব্যক্তি আমার উম্মতের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি আমাদের বড়দেরকে সম্মান দেয় না, ছোটদেরকে স্নেহ করে না এবং আলেমের অধিকার চেনে না।”
(আহমাদ ২২৭৫৫, ত্বাবারানী, হাকেম, সহীহ তারগীব ৯৫)